নিজ যোগ্যতায় পুলিশের গর্বিত সদস্য হোন। তদবির করে কিংবা ধান্ধাবাজদের খপ্পরে পড়ে নিজের ও পরিবারের ক্ষতি করবেন না। কারণ পুলিশের চাকরি পেতে কক্সবাজার জেলায় কোনো টাকা-পয়সা লাগে না। মাত্র ১০৩ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া যাবে। এর মধ্যে ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট এবং ৩ টাকার ফরম কিনলেই হবে।
এসব তথ্য দিয়ে কক্সবাজারজুড়ে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
রোববার সকাল থেকে জেলাজুড়ে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে পুলিশে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
জানা যায়, আগে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের সময় রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন প্রভাবশালীর কাছে তদবির নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন চাকরিরপ্রত্যাশী পরিবারের লোকজন। এমনকি গরু, ছাগল, জমি ও শেষ সম্বল বসতভিটে বিক্রি করে চাকরি নামের সোনার হরিণ ধরতে ঘুষের টাকা জোগাড় করতেন।
এরপরও অনিশ্চয়তা কাটতো না চাকরি আগ্রহী পরিবারের মাঝে। এমন পরিস্থিতি কক্সবাজারবাসীকে বারবার মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু এ বছর পুলিশ কনস্টেবল পদে ১০৩ টাকায় গর্বিত সদস্য হওয়ার আহ্বানে জেলা পুলিশের মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ কেন্দ্র করে জেলাবাসীর মধ্যে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
পাশাপাশি অনেক অসহায় ও গরিব পরিবারের যোগ্য সন্তানরা এবার পুলিশ নিয়োগের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কক্সবাজার শহরের পেশকারপাড়ার ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, জীবনে প্রথমবার দেখলাম এবং শুনলাম পুলিশের চাকরির জন্য ঘুষ দিতে হবে না। তাও আবার মাইকিং করে বলা হচ্ছে। যদি প্রচারণার সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকে, তা হলে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। কারণ যোগ্যতা থাকলে অসহায় ও গরিব অভিভাবকরাও বলতে পারবে আমার ছেলে কিংবা মেয়ে পুলিশ। এই সততার দৃষ্টান্ত দেখানোর জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, আগামী ২৬ জুন কক্সবাজার পুলিশ লাইন মাঠে কনস্টেবল পদে লোক নিয়োগ দেয়া হবে।
এবারে সব মিলিয়ে কক্সবাজার থেকে ৩৮৬ জন বাংলাদেশ পুলিশে স্থান পাবে। কিন্তু অভিযোগ আছে নিয়োগের সময় অনেকেই প্রতারণার শিকার হন। তাই মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পুলিশের চাকরির জন্য শেষ সম্বল হাতছাড়া করেন অনেক পরিবার। কিন্তু এসবের আশ্রয় নিলে উল্টো চাকরি হবে না। কারণ যোগ্যতায় যারা আসবেন না, তারা হাজারও তদবির কিংবা ঘুষ দিয়ে আসার সম্ভাবনা একদম নেই। সুতরাং এবারের নিয়োগ হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে।
পুলিশ সুপার মাসুদ বলেন, সবাইকেই আহ্বান করব ১০৩ টাকায় পুলিশে লোক নিয়োগের এ বার্তা জেলার অন্যান্য এলাকায় পৌঁছে দেবেন। সরকারি বিধি অনুযায়ী লাইনে দাঁড়াবে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যোগ্যতা অনুযায়ী পুলিশে চাকরি পাওয়া যাবে।
এবারে যারা নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় আসবে, তাদের মধ্যেও যদি কেউ কাউকে ঘুষ দিয়ে চাকরিতে আসার প্রমাণ মিলে তাহলে যোগ্যতা থাকার সত্ত্বেও তদন্তপূর্বক প্রমাণিত হলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে।
Tags
খবর