হ্যাপি বার্থডে ফেসবুক


৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪। গভীর রাত। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে ফাঁকিবাজ ছাত্রটি তখন ঘাপটি মেরে বসে আছে। সঙ্গে আরও কিছু ‘দুষ্টু’ বন্ধুবান্ধব। বন্ধুদের নিয়ে সে পুরোদস্ত্তর একটি ওয়েবসাইট দাঁড় করিয়ে ফেলেছে! নতুন কিছু করার রোমাঞ্চ খেলা করে তাঁর চোখে-মুখে। কোঁকড়া চুলের ছেলেটি তখনো জানে না, কী কাণ্ড করে বসেছে সে! বিশ্বের প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মানুষ তার বানানো ওয়েবসাইটে নাম লেখাবে, সে হবে বিশ্বের ২০তম ধনী এবং ২৪তম ক্ষমতাধর ব্যক্তি—এ সবকিছুই তার সুদূর কল্পনায়ও ছিল না! সে তখন খঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল তার সদ্য তৈরি করা ওয়েবসাইট—দ্য ফেসবুক!
হ্যাঁ, শুরুতে ফেসবুকের নাম ‘দ্য ফেসবুক’ই ছিল। যে ছেলেটাকে শুরুতেই ‘ফাঁকিবাজ’ বলছিলাম, তাঁকে নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি, অথচ তাঁকে সবাই এক নামে চেনে—মার্ক জাকারবার্গ! ৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকের জন্মদিন। এ বছর দশে পা রাখল এই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট। জন্মদিন উপলক্ষে ফেসবুক সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
বলো তো, ফেসবুকের রং নীল কেন? কারণ, মার্ক জাকারবার্গ আংশিক বর্ণান্ধ। নীল রংটাই তিনি সবচেয়ে ভালো দেখতে পান। সবুজ, লাল—এসব রঙের পার্থক্য ধরতে পারেন না।
২০০৬ সালে ক্রিস পুটনাম নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক হ্যাক করেছিলেন। ফলাফল? পরদিন সকালেই তিনি ফেসবুকের প্রধান কার্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন!
ফেসবুকের নাম যখন শুরুতে ‘দ্য ফেসবুক’ ছিল, নামের পাশেই একজন মানুষের অস্পষ্ট ছবি চোখে পড়ত। ছবিটি বিখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক আল পাচিনোর।
ফেসবুক ইউআরএলের শেষে ‘ /4’ লিখলেই তুমি পৌঁছে যাবে মার্ক জাকারবার্গের প্রোফাইলে। ( http://www.facebook.com/4)
ফেসবুকে ভাষা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তুমি চাইলে জলদস্যুদের ভাষাও সিলেক্ট করতে পারো! ভাষা নির্বাচনের সময় সে ক্ষেত্রে তোমাকে  English (Pirate) সিলেক্ট করতে হবে।
ধরো, এক সকালে তোমার ফেসবুকের মালিক হওয়ার শখ হলো। যদি ফেসবুক কিনে নিতে চাও, খুব বেশি নয়—কমপক্ষে ৪০ বিলিয়ন ডলার থাকতে হবে তোমার পকেটে!
ফেসবুকের চেহারা কদিন পর পর বদল করলেও, মার্ক জাকারবার্গ তাঁর টি-শার্ট বদল করার সময় পান না। এক ধূসর রঙের টি-শার্টটি গায়ে দিয়ে তিনি দিনের পর দিন পার করে দেন!
বিস্ট নামে জাকারবার্গের একটি পোষা কুকুর আছে। ফেসবুকে তার ফলোয়ারের সংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি! মার্ক জাকারবার্গকে ফেসবুকে ‘ব্লক’ করা যায় না!
ফেসবুকে তারকাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গায়িকা রিয়ান্নার ভক্তসংখ্যা সবচেয়ে বেশি (প্রায় আট কোটি ৪৬ লাখ)। পরের স্থানে আছেন যথাক্রমে এমিনেম (প্রায় আট কোটি সাত লাখ) এবং শাকিরা (প্রায় সাত কোটি ৮২ লাখ)।
সংখ্যাতত্ত্বে ফেসবুক
যদিও পরীক্ষার হলে কখনোই এসব প্রশ্ন আসবে না। তবু, জেনে রাখলে ক্ষতি কী?
প্রতি মাসে গড়ে কতজন মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন? —১৩১ কোটি
ফেসবুক ব্যবহারকারীরা প্রতি মাসে মোট কতটুকু সময় ফেসবুকের পেছনে ব্যয় করেন? —৬৪ কোটি মিনিট
ফেসবুকে মোট পেইজের সংখ্যা কত? —পাঁচ কোটি ৪২ লাখ
গড়ে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর কতজন বন্ধু থাকেন? —১৩০ জন
ফেসবুকে ফেইক (ভুয়া) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কত? —আট কোটি ১০ লাখ
সূত্র: সিএনএন, স্ট্যাটিসটিক্স ব্রেইন

Post a Comment

Previous Post Next Post